দু'টি পরিবাহী পাতকে যদি একটি অপরিবাহী মাধ্যমে পৃথক বা আলাদা করা হয় এবং ব্যবস্থাটি যদি বিদ্যুৎ শক্তি ধরে রাখতে পারে তবে সেই ব্যবস্থাকে ক্যাপাসিটর বলে। অর্থাৎ ক্যাপাসিটর এমন একটি ডিভাইস যার সাহায্যে ইলেকট্রিক্যাল শক্তিকে ধারণ করে রাখা যায়। ক্যাপাসিটরের একক ফ্যারাড । একে F যারা প্রকাশ করা হয়। ক্যাপাসিটর বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে রাখতে পারে। ক্যাপাসিটরের এই চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাকে ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স বলে। কোন ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স এক ফ্যারাড তখনি বলা হবে যখন ক্যাপাসিটরের প্লেট দু'টো এক চার্জ কুলম্ব সঞ্চয় করলে যদি প্লেট দু'টির বিভব পার্থক্য এক ভোল্ট হয়
ক্যাপাসিটরের কাজ (ভি সি সরবরাহের ক্ষেত্রে)
যখন ক্যাপাসিটরের মধ্যে ডি সি সাপ্লাই দেয়া হয়, তখন ডি. সি সাপ্লাই এর পজেটিভ আয়ন কাপাসিটরের পজেটিভ প্লেটে জমা হয় এবং নেগেটিভ আরন ক্যাপাসিটরের নেগেটিভ প্লেটে জমা হয়। উক্ত প্রক্রিয়ার পজেটিভ এবং নেগেটিভ আয়ন দিয়ে ক্যাসিটরের প্লেট দু'টি চার্জ পূর্ণ হলে সরবরাহ থেকে আর চার্জ গ্রহণ করে না। সেই সময় ব্যাটারী থেকে আর কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। এমতাবস্থার ক্যাপাসিটর চার্জ পূর্ণ হয়েছে বলে ধরা হয়। এখন ক্যাপাসিটরের টার্মিনালে কোন লোড সংযোগ করলে ক্যাপাসিটর লোডে কারেন্ট প্রবাহিত করে ডিসচার্জ হয়। এই ভাবে ক্যাপাসিটর ডি. সি সরবরাহে কাজ করে।
ক্যাপাসিটরের কাজ (এ. সি সরবরাহের ক্ষেত্রে)
যখন ক্যাপাসিটরে এ. সি সাপ্লাই দেয়া হয়, তখন ক্যাপাসিটরের পজেটিভ প্লেট পজেটিভ হাফ সাইকেল দিয়ে চার্জ হয়। আবার পরক্ষণে নেগেটিভ হাফ সাইকেল দিয়ে ক্যাপাসিটরের নেগেটিভ প্লেট চার্জ যুক্ত হয়। পরবর্তী সাইকেলে পজেটিভ প্লেটে নেগেটিভ ইলেকট্রন এবং নেগেটিভ প্লেটে পজেটিভ ইলেকট্রন প্রবাহিত হলে ক্যাপাসিটর ডিসচার্জ হতে থাকে। ক্যাপাসিটরে এসি সাপ্লাই সরবরাহ করলে এই ভাবে অনবরত চার্জ এবং ডিসচার্জ হতে থাকে।
ক্যাপাসিটরের প্রকারে
ক্যাপসিটর সাধারণত দুই প্রকার-
• ফিক্সড ক্যাপাসিটর (Fixed Capacitor) • ভেরিয়েবল ক্যাপাসিটর (Variable Capacitor)
ফিক্সড ক্যাপাসিটর কে আবার হয় ভাগে ভাগ করা যায়-
• পেপার ক্যাপাসিটর (Paper Capacitor) • পলিয়েস্টার ক্যাপাসিটর (Polyeater Capacitor)
• এয়ার গ্যাপ ক্যাপাসিটর ( Air gap Capacitor) • মাইকা ক্যাপাসিটর (Mica Capacitor)
• সিরামিক ক্যাপাসিটর (Ceramic Capacitor) • ইলেকট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর (Electroline Capacitor)
ভ্যারিয়েবল ক্যাপাসিটর তিন প্রকার-
• ট্রিমার ক্যাপাসিটর (Tremer Capacitor) • গ্যাং ক্যাপাসিটর (Gang Capacitor)
• প্যাডার (Padder Capacitor)
ক্যাপাসিটরের ব্যবহার
• রেডিও, টেলিভিশনের টিউনিং সার্কিটে
• ডি কাপলিং বাইপাস সার্কিটে
• অসিলেটর এবং ফ্রিকোয়েন্সি ডিটারমিনিং সার্কিটে
• বিভিন্ন সার্কিটে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে রাখার জন্য
• ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে ফিল্টার হিসেবে
• ইলেকট্রিক্যাল মোটরের স্টার্টিং টর্ক উৎপন্ন করার জন্য এবং মোটরের ফেজ এ্যাঙ্গেল পরিবর্তন করার জন্য ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়
ক্যাপাসিটর টেষ্ট
ওহম মিটারের সাহায্যে ক্যাপাসিটর টেষ্ট করা হয়। ক্যাপাসিটর কম মানের হলে মিটার উচ্চ রেঞ্জে সেট করতে হবে। আর ক্যাপাসিটর উচ্চ মানের হলে ওহম মিটারের নবটি কম রেঞ্জে সিলেক্ট করতে হবে। এবার মিটারের প্রোবদু'টি ক্যাপাসিটরের দুই টার্মিনালে সংযুক্ত করলে বেশি মানের ক্যাপাসিটরের ক্ষেত্রে মিটারের পয়েন্টারের ডিফ্লেকশন বেশি এবং কম মানের ক্যাপাসিটরের ক্ষেত্রে মিটারের পয়েন্টারের ডিফ্লেকশন কম হবে। ওহম মিটারের কাঁটা দ্রুত ডিফ্লেকশন দেয়ার পর যদি আস্তে আস্তে অসীম স্থানে আসে তাহলে বুঝতে হবে ক্যাপাসিটর ভাল আছে । যদি দ্রুত আসীম চলে আসে তাহলে বুঝতে হবে ক্যাপাসিটরে লিকেজ আছে। আর যদি একেবারে না আসে তাহলে বুঝতে হবে ক্যাপাসিটর শর্ট আছে ।
আরও দেখুন...